মো. আল মামুন
গ্রাম-কলিগ্রাম, থানা-মুকসুদপুর
জেলা-গোপালগঞ্জ
প্রশ্ন : পেয়ারার ফল পচা ও মাছি পোকা ফল নষ্ট করে তার প্রতিকার কী?
উত্তর : পেয়ারার ফল পচা ও মাছি পোকা প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় প্রতিটি পেয়ারা মার্বেল আকার ধারণ করলে ৬টি ছিদ্রযুক্ত ব্রাউন পেপার প্যাকেট দ্বারা আবৃত করা। গাছের নিচে ঝরে পড়া পেয়ারাগুলো সংগ্রহ করে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হয়। এছাড়া ফল পচা রোগের প্রতিকার হিসাবে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলিলিটার হারে টিল্ট ২৫০ ইসি অথবা স্কোর ২৫০ ইসি ১৫ দিন পরপর স্প্রে করা। মাছি পোকা দমনের জন্য প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলিলিটার হারে সবিক্রন ৪২৫ ইসি অথবা ০.৫ মিলিলিটার হারে ভলিয়াম ফ্লেক্সি ৩০০ এসসি নামক কীটনাশক মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর স্প্রে করতে পারেন।
সুজিত সরকার
গ্রাম-জয়নগর, থানা-দুর্গাপুর
জেলা-রাজশাহী
প্রশ্ন: আমার কামরাঙা গাছে ফুল আসে কিন্তু ফুলগুলো ঝড়ে যায়। কী করলে সমাধান হবে।
উত্তর : সাধারণত বীজের গাছে ৩-৪ বছর পর ফুল আসে। তবে প্রথম বছর অধিকাংশ ফুলই ঝরে যায়। আর কলমের গাছে ১-২ বছরের মধ্যে ফুল আসে। প্রতি বছর গাছে সুষম সার প্রয়োগ এবং নিয়মিত পানি সেচ না দিলে ফুল ফুটলেও তা ঝরে যায়। এছাড়া জোরে বাতাস বইলে পরাগায়ন ঠিকভাবে না হলেও ফুল ঝরে যেতে পারে। গাছের বয়স ৫ বছরের বেশি হলে সুষম সার হিসেবে গোবর সার ৪০-৫০ কেজি, ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম, এমওপি ৫০০ গ্রাম এবং ৪০০ টিএসপি সার সমান দ্ইুভাবে ভাগ করে বছরে দুইবার বর্ষার আগে (জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে) ও বর্ষার পরে (আশ্বিন মাসের প্রথমদিকে) প্রয়োগ করতে হয়। ফুল আসার সময় গাছের গোড়ায় সেচ প্রদান করে মাটির রস যেন জো অবস্থায় থাকে সে ব্যবস্থা করতে হয়।
গৌতম চন্দ্র
জেলা-সাতক্ষীরা, উপজেলা-তালা
গ্রাম-কুমির
প্রশ্ন : গলদা চিংড়ি পোনা পুকুরে ছাড়ার পর মাছ পাওয়া যায় না কেন?
উত্তর : চিংড়ি পোনা একই বয়সের এবং একই সাইজের ছাড়তে হবে। কারণ বড় চিংড়ি ছোট চিংড়িকে খেয়ে ফেলে। জাল টেনে একই আকারের থেকে বড় চিংড়ি পেলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে। পুকুরের তলদেশে অত্যাধিক কাদা থাকলে বা পুকুরের পাড়ের গাছপালা থেকে পাতা পুকুরে পড়ে তলদেশের পরিবেশ নষ্ট হয়ে থাকলে এ সমস্যা হয়।
সাইফুল ইসলাম
জেলা-শেরপুর, উপজেলা-নকলা
গ্রাম-উরফা
প্রশ্ন : মাছের হোয়াইট স্পট বা ব্ল্যাক স্পট রোগে কী করব?
উত্তর : এটি ভাইরাসজনিত রোগ। চাষের আগে সঠিক নিয়মে ঘের প্রস্তুত করতে হবে।
* তলদেশের পচা কাদা মাটি তুলে ফেলতে হবে। প্রয়োজন অনুসারে চুন ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে (শতকে ৫০০ গ্রাম) মাটি ও পানি শোধন করতে হবে।
* ঘন ফিল্টার নেটের মাধ্যমে ছেঁকে পানি প্রবেশ করাতে হবে যেন ভাইরাস বহনকারী প্রাণী বা তার ডিম প্রবেশ করতে না পারে।
* সুস্থ সবল জীবাণুমুক্ত পোনা সঠিক পরিমাণে ছাড়তে হবে।
* ব্যবহৃত জাল, পাত্র এবং সরঞ্জামাদি ব্যবহারের আগে ও পরে ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানিতে/ উচ্চ ঘনত্বের পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণে ভিজাতে হবে এবং রৌদ্রে ভালোভাবে শুকাতে হবে।
* পানির গভীরতা ঠিক রাখতে হবে এবং নিয়মিত চুন, পুষ্টিকর খাবার ও সার দিতে হবে।
রফিকুল ইসলাম
গ্রাম-ময়দানদীঘী, থানা-বদা
জেলা-পাঞ্চগড়।
প্রশ্ন : পেঁপে গাছের কা- পঁচে যাচ্ছে। কী করণীয়?
উত্তর : এটি ছত্রাকজনিত রোগ। বর্ষা মৌসুমে কা- পচা দেখা যায়।
- রোগাক্রান্ত চারা দেখামাত্র তা তুলে ফেলতে হবে
- পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা রাখতে হবে।
- গাছের কাণ্ডের চারদিকে ১% বর্দোমিশ্রণ বা রিডোমিল গোল্ড (২ গ্রাম/লিটার) স্প্রে করতে হবে।
কুদরত আলী
গ্রাম-সিন্দুরকৌটা, থানা-গাংনী
জেলা-মেহেরপুর
প্রশ্ন : লাউ গাছে লাল লাল পোকা আছে। পাতা ও ফুল খেয়ে ফেলাচ্ছে। কী করণীয়।
উত্তর : এজন্য
- ক্ষেতের আশপাশে আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে।
- হাত জাল দিয়ে পোকা ধরে মেরে ফালতে হবে।
- পাতার ওপর ছাই ছিটিয়ে দিতে হবে।
- আক্রমণ বেশি হলে রিপকর্ড (১ গ্রাম/লিটার) বা একতারা (১ গ্রাম/লিটার) বা সেভিন (২ গ্রাম/লিটার) স্প্রে করতে হবে।
মো. আরাফাত হোসেন
গ্রাম-উত্তর ডিহি, থানা-ফুলতলা, জেলা-খুলনা
প্রশ্ন : পান গাছের গোড়া পচে যাচ্ছে, কী করব?
উত্তর : গাছের গোড়ায় মাটির কাছে একটি মধ্যপর্ব কালো বর্ণ ধারণ করে এবং এর ওপরে সাদা সাদা মাইসেলিয়াম দেখা যায়। হাতের চাপ দিলে আঁশ ছিঁড়ে পৃথক হয়ে যায়। পরবর্তীতে লতা, পাতা ও ডগা ঢলে পড়ে। প্রতিকার হিসেবে রোগ মুক্ত বাগান থেকে লতা সংগ্রহ করতে হবে। রোপণের পূর্বে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ব্যভিস্টিন বা নোইন নামক ছত্রাকনাশক দিয়ে লতা শোধন করে নিতে হবে। আক্রান্ত লতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে বা নষ্ট করে ফেলতে হবে। পানের বরজ পরিষ্কারÑপরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সরিষার খৈলের সঙ্গে ডায়াথেন এম-৪৫ মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্ত গাছের গোড়ায় কপার অক্সিক্লোরাইড বা ১% বর্দোমিশ্রণ ব্যবহার করতে হবে। রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি স্কোর বা ২.৫ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ ১০-১২ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।
মো. আবদুল রাহিম
গ্রাম-একডালা, থানা-রানীনগর
জেলা-নওগাঁ
প্রশ্ন : কচি নারিকেল কালো হয়ে ঝরে পরে যাচ্ছে, কী করব?
উত্তর : গাছ পরিষ্কারÑপরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রান্ত নারিকেল সংগ্রহ করে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। আক্রান্ত গাছে প্রতি লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ স্প্রে করতে হবে বা ১% বর্দোমিশ্রণ ব্যবহার করতে হবে।
আল আমিন
গ্রাম-বরতুলা, থানা-পিরগঞ্জ
জেলা-ঠাকুরগাও
প্রশ্ন : গরু বা ছাগলের ডায়রিয়া হলে কী করব?
উত্তর : এসটিনজেন্ট মিক্সার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে সংগ্রহ করে খাওয়ানো। তাছাড়া ডায়াভেট, ইস্ট্রিনেক্স, ইস্ট্রিনা বা এস্টোভেট ১৫০ গ্রাম পাউডার ১০০ কেজি ওজনের গরু বা ছাগলকে খাওয়ানো যাবে তিন দিন খাওয়াতে হবে। ছাগল বা গরুর ওজন কম হলে ওষুধের মাত্রাও আনুপাতিক হারে কমিয়ে খাওয়াতে হবে।
-গরু বা ছাগলের লালন-পালনের সবসময় পরিষ্কারÑপরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
মমিনুল ইসলাম
গ্রাম-খুন্তি, থানা-হাতিয়া
জেলা-নোয়াখালী
প্রশ্ন : ছাগলের নিউমোনিয়ায় করণীয় কী?
উত্তর : অ্যান্টিবায়োটিক স্ট্রেপ্টোপি ১০০ কেজি ওজনের জন্য ২.৫ গ্রাম ৩-৪ দিন এবং মক্সিলিন, ভেট এল এ ১৪০০ কেজি ওজনের জন্য ১০ মিলি করে ৩-৪ দিন দিতে হবে।
-আক্রান্ত গরু/ছাগলকে অতি দ্রুত অন্যদের থেকে আলাদা করে নিতে হবে। আক্রান্ত গরু/ ছাগলকে স্যাঁতসে্যঁতে স্থান থেকে দূরে রাখতে হবে।
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মারুফ*
*সহকারী তথ্য অফিসার (শস্য উৎপাদন), কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫